Welcome to my Blog

Tuesday, 11 June 2013

Robindranath and Noble prize

Robindranath Tegor
           ১৯২২ সালে রবীন্দ্রনাথ বিলেতে যাওয়ার প্রাক্কালে যত্ন সহকারে 'গীতাঞ্জলি'র তর্জমা করেন কবির অভিপ্রায় ছিল বিলেতে গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করা কবি তার স্বকৃত অনুবাদের খাতাটি গচ্ছিত রাখেন পুত্র রথীন্দ্রনাথের কাছে অসাবধানতা বশত রথীন্দ্রনাথ খাতাটি হারিয়ে ফেয়েন লণ্ডনের আন্ডার গ্রাউন্ড টিউব রেলে কথা ছিল পরেরদিনই কবি রোদেনস্টাইনের হাতে গীতাঞ্জলির পান্ডুলিপি তুলে দেবেন স্বভাবতঃই কবি পুত্র মহা দুশ্চিন্তার শিকার হলেন শেষমেশ এক জনের পরামর্শে রথীন্দ্রনাথ আন্ডার গ্রাইন্ড রেলের লস্ট প্রপার্টি অফিসে যোগাযোগ করে হারানো সম্পদ ফিরে পেলেন এই পান্ডুলিপি থেকেই ৭৫০ কপি ইংরেজি গীতাঞ্জলি মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হল যা কবিকে নোবেল পুরস্কার এনে দিল

             সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সূচনা ১৯০১ সাল থেকে নিয়ম ছিল, সুইডিশ আকাডেমির নোবেল কমিটির কাছে নোবেল পুরস্কারের জন্য নাম সুপারিশ করবে বিভিন্ন দেশের স্বীকৃত সাহিত্য সংগঠনের সদস্যরা, অথবা ইতিমধ্যে যারা নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তারা ইংল্যান্ডে নোবেল পুরস্কারের জন্য নাম সুপারিশের অধিকার ছিল রয়্যাল সোসাইটি অব লিটারেচার অব দ্য ইউনাইটেড কিংডম (Royal Society of Literature of the United Kingdom)- এর সদস্যদের এই সোসাইটির একজন সদস্য ছিলেন স্টার্জ র ইনি রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করেন লক্ষণীয় স্টার্জের সুপারিশটি বড়ই সংক্ষিপ্ত, তিনিকবির কবিত্ব বা গীতাঞ্জলি সম্পর্কে একটি শব্দও ব্যবহার করেননি ব্যক্তি হিসাবে তিনি রবীন্দ্রনাথকে যোগ্যতা সম্পন্ন বলে মনে করেছিলেন

             যাই হোক, স্টার্জ মুরের সুপারিশ বিচার করে সুপারিশটির গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় নোবেল কমিটির অন্যতম সদস্য পের হ্যালস্ট্রমের ( Pur Hallstrom) ওপর হ্যালস্ট্রম তাঁর রিপোর্টে লিখলেন " It is certain, however, that no poet in Europe since the death of Goethe in 1832 can rival Tegor in noble humanity, in uneffected greatness in classical tranquility." কিন্তু এসব সুপারিশ বা মূল্যায়নও সুইডিস আকাদেমির সদস্যদের প্রভাবিত করতে পারেনি প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ইংলন্ডের রয়্যাল সোসাইটি অব লিটারেচারের ৯৭ জন সদস্য প্রস্তাব করে বসলেন টমাস হার্ডি(Thomas Hardy)-র নাম এই শেষ নয়, স্পেন থেকে এল বেনিতো পেরজ গ্যালডস (Benito Peroz Galdos) –এর নাম, সুইজারল্যান্ড থেকে এল কেয়ার স্পিটেলার (Care Spitteler) –এর নাম, ইতিলি থেকে এল গ্রাজিয়া ডেলেডা (Grazia Deledda) –এর নাম নামের সুপারিশ এল অন্যান্য দেশ থেকেও যেমন ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, বেলজিয়াম ইত্যাদি নোবেল কমিটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছিল ফরাসি সাহিত্যের ইতিহাসকার এবং নীতিবিদ এমিলে ফগেট (Emile Faguet) –এর নাম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের প্রাপক ঠিক করতে সুইডিশ আকাদেমির ১৮ জন সদস্য মনোনীত হয় ১৯১৩ –য় সুইডিশ আকাদেমির ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ছিলেন রাজনীতিক, লেখক, ঐতিহাসিক, আইনজীবী, ভাষাতাত্ত্বিক, শিক্ষাবিদ, ভ্রমনকাহিনি লেখক, স্থপতি, কবি, শিল্পী, পত্নতাত্ত্বিক, দারর্শনিক, বিশপ, ধর্মতত্ত্ববিদ –কে নন ?

                 সুইডিশ আকাদেমির বিবেচনার জন্য যখন নোবেল কমিটির সিন্ধান্ত পেশ করা হয়, রবীন্দ্রনাথের সমর্থনে এগিয়ে এলেন সেকালে সুইডেনের শ্রেষ্ঠ কবি কার্ল গুসতাফ ভন হাইডেনস্ট্যাম (Carl Gustaf Verner Ven Heidenstam), ইনি ছিলেন সুইডিস আকাদেমির সদস্য সম্ভবত কেউ কেউ প্রস্তাব করে ছিলেন রবীন্দ্রনাথকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করার জন্য আরও কিছুকাল –অন্ততপক্ষে বছরকাল অপেক্ষা করার কথা কিন্তু কার্ল গুসতাফ ভার্নার সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেন, ‘We must not tarry and miss the opportunity by waiting till another year সদস্যরা প্রভাবিত হয়ে একটু একটু করে গীতাঞ্জলি পাঠে মনোযোগি হলেন শেষ পর্যন্ত সেই অভাবনীয় ঘটনাটি ঘটল, ১৩ নভেম্বর যে ১৩ জন সদস্য উপস্থিত হয়ে ভোট দিলেন তাঁদের ১২ জনেরই সমর্থন মিলল রবীন্দ্রনাথের পক্ষে ১৯১৩ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হলেন রবীন্দ্রনাথ সে বছরের নোবেল পুরষ্কারের আর্থিক মূল্য ছিল ৮,০০০ পাউন্ড

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comments. Please visit again.