কালীপ্রসন্ন সিংহ |
কালীপ্রসন্ন সিংহ বাংলাদেশের এক ক্ষণজন্মা
পুরুষ । তাঁর
জীবিত কাল মাত্র ত্রিশ ।
এই
সল্পকালের মধ্যে বাঙালীর সমাজ সংস্কারে, শিক্ষাবিস্তারে
এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে যে-অবদান তিনি রেখে গেছেন তাতে বাঙালী সুধীসমাজে
তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ।
তাঁর
সময়ে বাংলাদেশে এম কোন আন্দোলন ছিল না যার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না । তাঁর
অন্যতম প্রধান কীর্তি সংস্কৃত পণ্ডিতমণ্ডলীর সহায়তায় সমগ্র মহাভারতের অসংক্ষেপিত অনুবাদ
প্রকাশ ।
সাহিত্যক্ষেত্রে নেমে পরপর তিনি 'বিদ্যোৎসাহিনী '(১৮৫৬), 'সর্বতত্ত প্রকাশিকা '(১৮৫৭), 'বিবিধার্থ সংগ্রহ ' ও 'পরিদর্শক '(দৈনিক ) নামে চারখানি পত্রিকা পরিচালনা করেন । গ্রন্থ রচনা করতে গিয়ে তিনি 'বাবু নাটক '(প্রহসন -১৮৫৪ ), 'বিক্রমোর্বশী '(১৮৫৭ ), 'সাবিত্রী সত্যবান '(১৮৫৮ ), 'মালতীমাধব '(১৮৫৯) প্রভৃতি নাটক রচনা করেন ।
সাহিত্যক্ষেত্রে নেমে পরপর তিনি 'বিদ্যোৎসাহিনী '(১৮৫৬), 'সর্বতত্ত প্রকাশিকা '(১৮৫৭), 'বিবিধার্থ সংগ্রহ ' ও 'পরিদর্শক '(দৈনিক ) নামে চারখানি পত্রিকা পরিচালনা করেন । গ্রন্থ রচনা করতে গিয়ে তিনি 'বাবু নাটক '(প্রহসন -১৮৫৪ ), 'বিক্রমোর্বশী '(১৮৫৭ ), 'সাবিত্রী সত্যবান '(১৮৫৮ ), 'মালতীমাধব '(১৮৫৯) প্রভৃতি নাটক রচনা করেন ।
তাঁর
শ্রেষ্ঠ কীর্তি 'হুতোম প্যাঁচার নক্সা '(১৮৬২-৬৩ ) ।
'কলকাতার হাটহদ্দ ' এবং 'বাবুদের দুর্গোৎসব ' নামে দুইটি পুস্তিকাকেও পণ্ডিতেরা
তাঁরই রচনা বলে অনুমান করেছেন ।
কারণ
এই দুটির বিষয়বস্তু, ভাষা ও রচনারীতি অবিকল
'হতুম প্যাঁচা 'রই অনুরুপ ।
'হুতুম প্যাঁচার নক্সা ' - আদ্যন্ত কলিকাতার কথ্য ভাষায়
রচিত । এটা
রচনা করে কালীপ্রসন্ন বাংলা ভাষায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেন । টেকচাঁদের
'আলালের ঘরের দুলাল ' সহজ ভাষায় লেখা হলেও এর কাঠামোটি
সাধুরীতির, ক্রিয়াপদ ও সর্বনাম অধিকাংশ স্থলে সাধু, কিন্তু 'হুতুম প্যাঁচার নক্সা ' আধমিশ্রি চলিত ভাষায় লেখা ।
কিছু
উদাহরণ -------
অমাবস্যার
রাত্তির,--
অন্ধকার ঘুটিঘুট্টি -- গুড়গুড় করে মেঘ ডাকছে -- থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে
-- গাছের পাতাটি নড়ছে না -- মাটি থেকে যেন আগুনের তাপ বেরুচ্ছে -- পথিকেরা এক একবার
আকাশের পানে চাচ্ছেন -- আর হন হন করে চলছেন ।"
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comments. Please visit again.