This blogs is for you, if you love Bengal.
If you speak in Bengali.
If you like Bengali literature and culture.
If you don't believe in caste, class and religious divides.
Tuesday, 18 June 2013
বাংলার লোকসঙ্গীত/Bengali Folk song
বাংলার বাউল গান
প্রাচীনকাল হইতে আরম্ভ করিয়া আধুনিকতম কাল
পর্যন্ত বাঙালীর সাধনার শ্রেষ্ঠ সম্পদই তাঁহার সঙ্গীত ।তাই
বলা য়ায় বাংলাকে গানের মধ্যদিয়ে যত সহজে জানা য়ায, অন্য কোনো বিষয়ের মধ্যদিয়ে তত সহজ নহে ।বাঙালীর
ধ্যানধারণা, সামাজিক আচার-আচরণ, ব্যাক্তি ও গোষ্ঠীজীবনের সুখ-দুঃখের অনুভূতি সবই সঙ্গীত সাধনায় যে বৈচিত্র্য
প্রকাশ পাইয়াছে, তাহার সঙ্গে পরিচয় করিতে না পারলে বাঙালীর চরিত্র
এবং তাহার জাতীয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা করা যাইবে না ।বস্তুত
বঙ্গীয় সংস্কৃতির প্রাণ হল সঙ্গীত ।বাংলা
সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাগীতি ।বাংলা
সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথের মুখ্য পরিচয় তিনি একজন গীতিকবি ।বাংলার
গীতি সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছে রামপ্রসাদ, কমলাকান্ত,
জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, বিদ্যাপতি,
দ্বিজেন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ,
রজনীকান্তের সৃষ্টিতে ।শুধু
পরিশীলিত সঙ্গীতই নয়, লোকসঙ্গীতেও আমাদের সমৃদ্ধি
ও বৈচিত্র্য নেহাৎ কম নয় ।জীবনের
এমন কোনো পর্যায় নেই, যা নাকি আমাদের লোকসঙ্গীতে
ধরা পড়ে নি ।লোকসঙ্গীতের
নিরিখে বাংলাদেশ চারটি স্পষ্ট বিভাগে বিভক্ত - পশ্চিমাঞ্চল,
উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল ।পশ্চিমাঞ্চলের
অন্তর্গত মেদিনীপুর,বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম ।উত্তরাঞ্চলের
অন্তর্গত মালদহ, দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি,
কোচবিহার ও রংপুর ।পূর্ব
ময়মনসিংহ,
পশ্চিম শ্রীহট্ট, উত্তর ত্রিপুরা নিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল
।আর
দক্ষিন পূর্বাঞ্চলভুক্ত হল নোয়াখালি ও চট্টগ্রাম ।প্রসঙ্গত
উল্লেখ যে রাজনৈতিক কারণে যে বিভাজনই ঘটে থাকুক, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সেই বিভাজন গুরুত্বহীন ।
বাংলার লোকসঙ্গীত
পশ্চিম
বাঁকুড়া,পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ বীরভূমে সমগ্র ভাদ্রমাস ব্যাপী
গীত হয় ভাদু গান ।ভদ্রেশ্বরীকে
পঞ্চকোট রাজার কন্যা কল্পনা করে তাকে নিয়ে কিংবদন্তী রচিত হয়েছে ।অনূঢ়া ভাদুর
নাকি মৃত্যু হয়েছিল ।মূলত অনূঢ়া
কন্যারাই ভাদুপূজার আয়োজন করে ।এই পূজার
মূখ্য উপাচার ভাদুসঙ্গীত ।সমগ্র পৌষ
মাস ব্যাপী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর,
হুগলির কিয়দাংশে, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম প্রভৃতি অঞ্চলে টুসু পূজা উপলক্ষে গীত হয় টুসু সঙ্গীত ।টুসুকে
ঘরের মেয়ে রূপেই বিবেচনা করা হয়, তাঁর আহ্বানে গাওয়া হয় টুসু সঙ্গীত ।পুরুলিয়া
জেলার ঝুমুর শ্রোতাকে আবিষ্ট করে তার সুরের মাদকতায় ।মালদহে
শোনা য়ায়গম্ভীরা ।গম্ভীরা
লোকনাট্য রূপেও পরিচিত ।গম্ভীরা
গান রচিত হয় শিবকে উপজীব্য করে ।তাই বলে
এই গান কোনোভাবেই আধ্যাত্মিক সঙ্গীত নয় ।মুর্শিদাবাদের
আলকাপ, নদীয়ার বোলান, অষ্টক, কোচবিহারের
কুশান গান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গাজীর গান, উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া, পূর্ববঙ্গের ভাটিয়ালি আমাদের লোকসঙ্গীতকে
সমৃদ্ধ করেছে ।ভাওয়াইয়া
রাজবংশী ভাষায় রচিত, এই গানে সহায়তা নেওয়া হয় দোতারার ।শিল্পীর
গলা ভাঙ্গা এ গানের বৈশিষ্ট্য ।কুশান গানে
বাজে ব্যানা ।পূর্ববঙ্গের ভাটিয়ালিকে অনেকে লোকসঙ্গীতের
শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দিতে চান ।উদাত্ত
কণ্ঠে যখন শোনা য়ায -----------"মন মাজি তোর বৈঠা নেরে / আমি আর বাইতে পরলাম না
।"
তখন সহজেই তা শ্রোতার অন্তরকে স্পর্শ করে ।বীরভূমের
বাউল গান লোকসঙ্গীত হিসেবে বিশিষ্ট ।সহজ ভাষায়
গভীর তত্ত্বকথা প্রকাশিত হয় এই গানে ।সঙ্গে বাজে
একতারা, আনন্দলহরী ।গানের আরো
প্রকার ভেদ আছে ।কর্ম উপলক্ষেগীত হয় কর্মসঙ্গীত, বিভিন্ন লোকধর্মাচারণের সঙ্গে গীত হয় ধর্মিয় গীতি যেমন -সাহেবধনী, কর্তাভজা, বলাহাড়ী ইত্যাদি ।তাছাড়া
রয়েছে আখ্যান ভিত্তিক সঙ্গীত গীতিকা মহুয়া, মলুয়া, দস্যু কেনা রামের পালা, রূপবতী, চন্দ্রাবতী ইত্যাদি ।এসব গীতিকা
গাওয়া হয় ভাটিয়ালি সুরে ।আখ্যানগুল
নাটকীয় এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন ।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comments. Please visit again.