Welcome to my Blog

Tuesday 25 June 2013

Jatindranath Sengupta/ যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত

Jatindranath Sengupta (1887-1954)
               পৃথিবিকে আমরা ভালবাসি, আত্মীয় বলে মনে করি, কিন্তু কেউ কেউ তা পারে না পৃথিবীতে সবই আছে -এতো আলো, এতো আনন্দ, এত দুঃখ, এত সুখ কিন্তু এর সঙ্গে আমার সম্পর্ক কি ? আমাকে যেদিন চলে যেতে হবে, তার পরের দিন কি কলিকাতায় ট্রাম চলবে না কিংবা আমার বারান্দার টবের গাছটিতে একটি ফুল ফুটবে না ? জানি না এইটুকু মাত্রই এঁদের অনুভূতি কিনা কিন্তু এই আত্মসমাহিত ব্যক্তি প্রিয়ার প্রেম, পুত্রের আলিঙ্গনকেও অন্তরে আসন দিতে পারেন না বাংলা সাহিত্যে দু'জন কবিকে পাই যাঁদের সম্পর্কে অনেক কথা বললেও কিছুই বলা হয় না মনে হয় তাঁরা যেন আমাদের কথার অন্তরালে মৃদু মৃদু হাসছেন এঁদের প্রথমে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত এবং পরে জীবনানন্দ দাশ একমাত্র ইউরোপীয় কবি T. S. Eliot - এর সঙ্গেই এঁদের সগোত্র-আত্মীয়তা

                                               সৃষ্টির সুখে মহা খুসি যারা, তারা নর নহে , জড় ;
                                               যারা চিরদিন কেঁদে কাটাইল তারাই শ্রেষ্ঠতর
                                               মিথ্যা প্রকৃতি, মিছে আনন্দ, মিথ্যা রঙিন সুখ ;
                                               সত্য সত্য সহস্র গুণ সত্য জীবনের সুখ !
                                               সত্য সুখের আগুনে, বন্ধু, পরাণ যখন জ্বলে,
                                               তোমার হাতের সুখ-দুখ দান ফিরায়ে দিলেও চলে

          যতিন্দ্রনাথকে কি তবে নাস্তিক্যবাদী বলবেন, কেউ কেউ তাঁকে নৈরাশ্যবাদীও বলতে চান এ আসলে নৈরাশ্য বা নাস্তিক্য নয়, কবির এ এক দুর্জয় অভিমান জগৎ, জীবন, প্রেম, প্রকৃতির মধুভাণ্ড সকলই তো একটা প্রচণ্ড ফাঁকি অবশ্য ইহাদের অস্তিত্ব আছে কিন্তু কবির কাছে সবই মোহ - একটা ছলনা ছাড়া আর কি ? বঞ্চনার বিশ্বে শুষ্ককণ্ঠে চলতে চলতে সামান্য কয়বিন্দু পানীয় সংগ্রহ করে কতটুকু পিপাসা মিটতে পারে


                                                       চেরাপুঞ্জীর থেকে
                             একখানি মেঘ ধার দিতে পার গোবি-সাহারার বুকে ?

          একেবারেই সম্ভব নয় বিশ্ব 'চেরাপুঞ্জী 'ই থাকবে আর আমি 'গোবিসাহারা 'র পিপাসা নিয়ে থাকব সুতরাং এই কুহক অবলম্বন করে কবি চলতে পারে না

                                                         কে গাবে নূতন গীতা -
                                  কে ঘুচাবে এই সুখ-সন্ন্যাস -গেরুয়ার বিলাসিতা ?
                                                       কোথা সে অগ্নিবাণী -
                                 জ্বালিয়া সত্য, দেখিবে দুখের নগ্ন মূর্তিখানি !
                                                      একথা বুঝিব কবে -
                                 ধানভানা ছাড়া কোন উঁচু মানে থাকেনা ঢেকির রবে

          যতীন্দ্রনাথ তাই বাক্‌চাতুরি, ভাববিলাস, ক্লীব আধ্যাত্মিকতাকে ধিক্কার দিয়েছেন ইংরেজ কবি ডনের কবিতায় যে Metaphysical তত্ত্ব রয়েছে তা যতীন্দ্রনাথের উপর কিছুটা প্রভাব বিস্তার করে যতীন্দ্রনাথ সেই তত্ত্বের সাহায্যে একটি আত্মতত্ত্বে পৌঁছেছেন কবির কাব্যধর্মের দৃষ্টি প্রতিভাত হয় তাঁর কাব্যের নামকরণে কবির কাব্যগ্রন্থ গুলি - পরীচিকা (১৯২৩), মরুশিখা (১৯২৭), মরুমায়া (১৯৩০), সায়াম্ (১৯৪০), ত্রিযম (১৯৪৮) ও নিশান্তিকা (১৯৫৭) কবির চয়নিকা কাব্যের নাম, অনুপূর্বা (১৯৪৬)

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comments. Please visit again.