শ্রীকৃষ্ণ |
ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি,
হিন্দুদের মতে এদিন শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন । এই
দিনটি
'জন্মাষ্টমী ' হিসেবে পালিত হয় । পুরাণে
আছে মথুরা রাজ উগ্রসেনের পুত্র কংস ছিলেন ভীষণ অত্যাচারী । দৈববাণী
থেকে কংস জানতে পারে যে তাঁর খুড়তুতো বোন দেবকী (উগ্রসেনের ভাই দেবকে'র কন্যা ) 'র অষ্টম গর্ভের পুত্রই তাঁর মৃত্যুর কারণ
। এরপরই
স্বৈরাচারী কংস নিজের জীবনকে বিপদমুক্ত করার জন্য কৃষ্ণের পিতা বসুদেব ও মাতা দেবকীকে
কারাগারে নিক্ষেপ করলেন এবং এক এক করে দেবকীর সাতটি সন্তানকে জন্মের পরমূহূর্তেই বিনাশ
করলেন ।
তারপর এল সেই
ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি ।
সেদিন
সন্ধ্যা থেকে প্রকৃতি যেন রুদ্ররূপ ধারণ করল । ভয়ঙ্কর
দুর্যোগ এবং প্রবল দূরাচার যতক্ষণ না শেষ সীমায় গিয়ে উপনীত হয়,ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিকারের পণ ও পন্থা হয় না মুক্ত - এটাই ইতিহাসের অমোঘ বিধান
। রাত
বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিও যেন হয়ে উঠল ভয়ঙ্করী, ঝড়ের তান্ডব হল প্রচণ্ড ।
হঠাৎ
বজ্রপাতের তীব্র নিনাদে কারাকক্ষ কেঁপে উঠল এবং সেই ভয়াবহ দুর্যোগের মধ্যেই আবির্ভুত
হলেন এক জ্যোতির্ময় শ্যামকান্তি শিশু (শ্রীকৃষ্ণ ) । মানুষের
মুক্তিদূত এবং অধর্ম ও অসাধুর বিনাশকারীর জন্মস্থান হল কারাগার । অষ্টমী
তিথির মহারাত্রিতে ভূমিষ্ঠ হল অষ্টম গর্ভের সন্তান । ধর্মসংস্থাপন
করতে ভগবান স্বয়ং আবির্ভূত হলেন কৃষ্ণরূপে ।
তাই
এই মহাআবির্ভাবের সাক্ষী যে ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি,
সেটাই ইতিহাসের পাতায় চিরকালের জন্য 'জন্মাষ্টমী
' নামের মহিমায় মানুষের মুক্তিলগ্ন হিসাবে অক্ষয় হয়ে রইল । জন্মাষ্টমী
উপলক্ষে এদিন অনেক বাড়িতেই শ্রীকৃষ্ণের শিশু রূপ (বাল গোপাল ) -এর পুজো হয় । অনেকেই
উপোস করেন । আবার
অনেক বাড়িতেই তালের বড়া, ক্ষীর, মাখন, মিছরি, ননী দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে
ভোগ দেওয়া হয় ।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comments. Please visit again.